রাজধানীর ফার্মগেটস্থ আ.কা.মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে শেষ হলো তিনদিন ব্যাপি জাতীয় সবজি মেলা ২০১৭। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই মেলার সমাপনী দিন ছিল শনিবার (০৭ জানুয়ারি)। মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেন এমপি। তিনি বলেন, আমাদের আবাদী জমি কমে যাচ্ছে। তারপরও আমরা সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির বিবেনায় বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছি। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের গবেষক ও কৃষকদের নিরলস প্রচেষ্টায়। আর কৃষিবান্ধব সরকারের সঠিক দিকনির্দেশনার কারণে।তিনি উল্লেখ করেন, এক সময় আমরা মাছে ভাতে বাঙালী ছিলাম, এখন আমরা সবজি ভাতে বাঙালী। মেলায় বিভিন্ন স্টল ঘুরে এবং দর্শনার্থীদের চাহিদার কথা উল্লেখ করে বলেন, শহর এলাকায় বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় সবজি চাষের জন্য দর্শনার্থীরা যাতে মেলায় এসে জৈব সার, মাটির টব, চারা ক্রয় করতে পারে, সেজন্য মেলায় একটা নির্দিষ্ট কর্ণার করে সেগুলো বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে করতে হবে। কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ, যান্ত্রিকীকরণ, বছরব্যাপি নিরাপদ সবজি উৎপাদন, মানসম্মত ও রপ্তানিযোগ্যে পণ্য উৎপাদনের দিকে নজর দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) জনাব মো. মোশারফ হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ মো. কুদরত-ই-গনী।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সবজি চাষে অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান, জেলা ও মেলায় অংশগ্রহনকারী স্টলের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন। ২০১৬ সালে শাকসবজি আবাদে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে প্রথম হয়েছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মো. আবু হানিফ মোড়ল। দ্বিতীয় হয়েছেন পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার মো. আবদুল বারী। তৃতীয় হয়েছেন পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার মোছা. বেলী বেগম। এছাড়াও বাড়ির ছাদে শাকসবজি আবাদে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে ঢাকার গুলশান এলাকার জনাব কামরুজ্জামানকে প্রথম পুরষ্কার প্রদান করা হয়। পরিবেশবান্ধব জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ময়েনপুর কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রকে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে বিশেষ পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
সবজি উৎপাদন মাধ্যমে দেশে সবজির চাহিদা পূরণে বিশেষ অবদানের জন্য জেলা পর্যায়ে প্রথম দিনাজপুর, দ্বিতীয় টাংগাইল ও তৃতীয় হয়েছে ময়মনসিংহ জেলা। জাতীয় সবজি মেলা ২০১৭ এ অংশগ্রহণকারী স্টলগুলোর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে প্রথম হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যৌথভাবে দ্বিতীয় হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এবং তৃতীয় হয়েছে কৃষি তথ্য সার্ভিস। বেসরকারি পর্যায়ে প্রথম হয়েছে লাল তীর সীড লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে এসিআই এবং তৃতীয় হয়েছে মেটাল এগ্রো লিমিটেড। মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সকল স্টলকে পুরস্কৃত করা হয়। মেলায় মোট ৪৭টি স্টল অংশগ্রহন করে। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য ছিল ‘সুস্থ সবল স্বাস্থ্য চান, বেশি করে সবজি খান’।